ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করবেন?
ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে যেভাবে আয় করবেনব্যবসায়ের প্রসার বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এর ফলে আপনার পন্য ও সেবা সম্পর্কে গ্রাহক খুব সহজেই জানতে পারে। ফলে আপনার ব্যবসায়ের পরিচিতি দ্রুত বাড়ে। এতে করে আপনার ব্যবসায়ের বিক্রিয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যবসায়ের দ্রুত উন্নতি সাধন হয়। এছাড়াও Digital Marketing করে আপনি অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি? Digital Marketing এর গুরুত্ব, ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ, Digital Marketing থেকে কিভাবে আয় করবেন, ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করবেন কিভাবে। চলুন দেরি না করে বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নিই।
প্রথমেই আমরা জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং কি
আমরা যখন নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করি তখন আমাদের পন্যের প্রচারণার প্রয়োজন হয়। কারন আমরা যদি আমাদের পন্য ও সেবার প্রচারণা না করি তবে ক্রেতারা আমাদের পন্য সম্পর্কে অবগত হবে না। আর এই প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হলো অনলাইন। কারন বর্তমানে মানুষ বেশিরভাগ সময় অনলাইনে অতিবাহিত করে থাকে। তাই অনলাইনে যেকোনো পন্যের প্রচারণা করলে তা খুব দ্রুত ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যায়। মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে অনলাইনে পন্যের প্রচার প্রচারণাকেই বুঝায়।
বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে Digital Marketing হলো সকল ডিজিটাল মাধ্যম যেমন: মোবাইল,কম্পিউটার,ইন্টারনেট,সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহার করে ব্যবসায়ের পন্য ও সেবার প্রচারণা করা। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই বর্তমানে ব্যবসায়ের প্রচারপ্রচারণাও অনলাইনের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসায়ের পন্য ও সেবাসমূহ সম্পর্কে ভোক্তাদের জানানোর কৌশলকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।
শুধু যে ব্যবসায়ের জন্যই প্রচার প্রচারণা করা হয় তা কিন্তু নয়। যেকোনো নতুন কিছুর উদ্যোগ গ্রহন করলে সেটার প্রচারণার প্রয়োজন হয় যেমন কোনো অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, নির্বাচনী প্রচারণা ইত্যাদি।
তাহলে এতক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ডিজিটাল মার্কেটিং কি? তাহলে চলুন এবার জেনে নিই ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব
বর্তমান সময়ে Digital Marketing এর গুরুত্ব অনেক। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। ফলে যেকোনো পন্য কিনার আগে সেই পন্য সম্পর্কে অনলাইন থেকে বিস্তারিত জেনে নেয়। এছাড়াও মানুষ বর্তমানে অনলাইন থেকে পন্য কিনতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে যেকোনো পন্য গ্রাহকদের কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানো যায়। ফলে ব্যবসায়ের প্রসার দ্রুত বৃদ্ধি পায়। Digital Marketing এর মাধ্যমে কম সময়ে আপনার ব্যবসা গ্রাহকদের কাছে পরিচিতি লাভ করে।
Digital Marketing এর মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে খুব সহজেই সুসম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। এর মাধ্যমে আমরা আরো বেশি লোকদের সাথে সংযোগ স্থাপন ও বিপণন করতে পারি যা ব্যবসায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Digital Marketing দ্বারা আমরা টার্গেট কাস্টমারদের সঠিকভাবে ধরে ধরে পৌঁছে দিতে পারি এবং তাদের সাথে সম্পর্ক ও পরিচিতি গড়ে তুলতে পারি। এটি আমাদের ব্যবসায়ের জন্য অপরিহার্য।
অন্যান্য মার্কেটিং এর তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং এ খরচ খুব কম হয়। Digital Marketing এর মাধ্যমে খুব কম খরচে আপনি আপনার ব্যবসায়ের প্রচার করতে পারেন। কম খরচে খুব বেশি পরিমাণ কাস্টমারদের কাছে আপনার পন্যকে পৌঁছে দিতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভূমিকা অপরিহার্য।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রকারভেদ
এতক্ষন আমরা জানলাম ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব কি? এখন আমরা জানবো Digital Marketing এর প্রকারভেদ। তবে চলুন জেনে নিই এই প্রকারভেদ গুলো কি কি।
ডিজিটাল মার্কেটিং মূলত ২ প্রকার। এগুলো হলোঃ
- অনলাইন মার্কেটিং
- অফলাইন মার্কেটিং
অনলাইন মার্কেটিং
আমরা আমাদের ব্যবসায়ের পন্য ও সেবা ক্রেতাদের নিকট পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা করে থাকি। এই প্রচার প্রচারণাকেই সাধারনত মার্কেটিং বলা হয়। যখন আমরা এই প্রচার প্রচারণা কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করে থাকি তখন তাকে অনলাইন মার্কেটিং বলা হয়।
অনলাইন মার্কেটিং সাধারনত ৯ ধরনের হয়ে থাকে। এগুলো হলোঃ
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM)
- পে পার ক্লিক (PPC)
- সিপিএ মার্কেটিং (CPA Marketing)
- ই-মেইল মার্কেটিং (Email Marketing)
- কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
- ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং (Influencer Marketing)
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হলো ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজের প্রচারণার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পণ্যের প্রতি গ্রাহকদের আকর্ষণ বাড়ানো হয়।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্ম যেমন: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করে পণ্যের প্রচারণার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পন্য বা সেবার বিজ্ঞাপন সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদর্শন করতে পারবেন। ফলে আপনার ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা ভোক্তাদের কাছে দ্রুত পৌঁছাবে।
পে পার ক্লিক (PPC)
পে পার ক্লিক হলো একটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্রযুক্তি যেখানে বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের বিজ্ঞাপনগুলি প্রতিবার ক্লিক করার পরে একটি ফি প্রদান করে। বিজ্ঞাপনগুলিতে প্রতিবার ক্লিক করার ফলে বিজ্ঞাপনদাতারা যেই অর্থ প্রদান করে থাকে তাকেই পে পার ক্লিক বা PPC বলা হয়।
সিপিএ মার্কেটিং (CPA Marketing)
সিপিএ মার্কেটিং হলো Cost Per Action মার্কেটিং এর সংক্ষিপ্ত রুপ। এটি একটি প্রযুক্তিগত মার্কেটিং মডেল যেখানে একটি পন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অপর একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য চুক্তি করে থাকে। বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যদি সেই প্রতিষ্ঠান টি পন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পন্য বিক্রয় বৃদ্ধি করতে পারেন তবে সে কমিশন পাবে।
সিপিএ মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসায়ের মার্কেটিং সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করা হয়। এটি একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপায় যা আপনার কোম্পানির বা প্রোডাক্ট এর প্রচারণা ও বিপননে সহায়তা করে। এটি আপনার ব্যবসায়ের উন্নতি ও গ্রাহক আকর্ষণে সহায়তা করে।
ই-মেইল মার্কেটিং (Email Marketing)
ইমেইল মার্কেটিং হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং প্রযুক্তি যেখানে আপনি ইমেইল ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক বার্তা প্রেরণ করেন আপনার সংস্থার প্রাক্তন ও বর্তমান গ্রাহকদের কাছে।
এই মার্কেটিং প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে আপনি আপনার গ্রাহকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে পারেন, নতুন পণ্য বা পরিষেবা প্রদান করতে পারেন এবং ব্যবসায়ের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন।
কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)
কনটেন্ট মার্কেটিং হল একটি মার্কেটিং প্রযুক্তি যেখানে আপনি আপনার সংস্থার জন্য আকর্ষণীয় এবং মানসম্পন্ন বিষয়বস্তু তৈরি করেন। এই বিষয়বস্তু আপনার গ্রাহকদের সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করে এবং আপনার সংস্থার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। ব্লগ পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ভিডিও, পডকাস্ট, ই-বুক, ইনফোগ্রাফিক্স ইত্যাদি কনটেন্ট মার্কেটিং এর উদাহরণ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল একটি মার্কেটিং প্রযুক্তি যেখানে আপনি অন্য কোম্পানির পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করে তা বিক্রি করার জন্য কমিশন পান। আপনি একটি অ্যাফিলিয়েট হতে পারেন এবং আপনার নিজের ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ব্লগ, ই-মেইল মার্কেটিং এবং অন্যান্য মাধ্যমে পণ্য প্রচার করতে পারেন।
যখন কেউ আপনার প্রচারিত পণ্য কিনে থাকেন তখন আপনি কমিশন পান। এটি একটি সহজ ও কার্যকরী উপায় যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে আয় করতে পারেন।
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং (Influencer Marketing)
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং হল একটি মার্কেটিং প্রযুক্তি যেখানে সামাজিক মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ব্যবহার করে পন্য বা পরিষেবা প্রচার করা হয়।
এই ইনফ্লুয়েন্সারদের সামরিক অনুসরণকারী বেশি হয় এবং তাদের মতামত একটি প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে। এই মার্কেটিং প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কে জনপ্রিয়তা বা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে চেষ্টা করে।
অফলাইন মার্কেটিং
ব্যবসায়ের পন্য ও সেবার প্রচার প্রচারণার জন্য ডিজিটাল কোনো মাধ্যম ব্যবহার না করে যখন বিজ্ঞাপন, পোস্টার, বিলবোর্ড,ব্যানার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় তাকে অফলাইন মার্কেটিং বলে। বহু যুগ ধরে ব্যবসায়ের প্রচার প্রচারণার জন্য অফলাইন মার্কেটিং কৌশলগুলোই ব্যবহার হয়ে আসছে।
যদিও অনলাইন মার্কেটিং আসার পর অফলাইন মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা অনেকটাই কমে গেছে তবুও বর্তমানেও ব্যবসায়ের পন্য ও সেবার প্রচার প্রচারণার জন্য অফলাইন মার্কেটিং কৌশলগুলো ব্যবহার করা হয়।
অফলাইন মার্কেটিং সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। এগুলো হলোঃ
- মোবাইল এডভারটাইজিং (Mobile Advertising)
- রেডিও মার্কেটিং (Radio Marketing)
- টেলিভিশন এডভারটাইজিং (Television Advertising)
- বিলবোর্ড মার্কেটিং (Billboard Marketing)
মোবাইল এডভারটাইজিং হলো মোবাইল ডিভাইসে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের পদ্ধতি। এটি সাধারণত মোবাইল অ্যাপস, ওয়েবসাইট ব্রাউজার এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাজ করে।
মোবাইল এডভারটাইজিং এর মাধ্যমে ব্যবসায়ের পন্য বা সেবা প্রচার করা হয় মোবাইল ব্যবহারকারীদের সামনে। এটি প্রমোশনাল মেসেজ, ব্যানার বিজ্ঞাপন, ভিডিও বিজ্ঞাপন এবং ইন্টারেস্টিং অ্যাপস প্রদর্শনের মাধ্যমে কাজ করতে পারে।
রেডিও মার্কেটিং হল একটি বিপণন প্রক্রিয়া যেখানে প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড তাদের পণ্য বা পরিষেবা প্রচারের জন্য রেডিও মাধ্যম ব্যবহার করে। এটি বিভিন্ন রেডিও স্টেশনে বিজ্ঞাপন, স্পন্সরশিপ, প্রোগ্রাম প্রচার এবং ইউজারের মধ্যে পাঠানো প্রচারণা সম্পর্কিত হতে পারে।
রেডিও মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তাদের লক্ষ্য কাস্টমারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে চেষ্টা করে এবং তাদের পন্য বা পরিষেবা সম্পর্কে বিজ্ঞাপন করে উপস্থাপন করে।
টেলিভিশন এডভারটাইজিং হলো একটি বিপণন প্রক্রিয়া যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড তাদের পন্য বা পরিষেবা প্রচারের জন্য টেলিভিশন মাধ্যম ব্যবহার করে।
এটি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন, স্পন্সরশিপ, প্রোগ্রাম প্রচার সম্পর্কিত হতে পারে। টেলিভিশন এডভারটাইজিং এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তাদের লক্ষ্য কাস্টমারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে চেষ্টা করে।
বিলবোর্ড মার্কেটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড তাদের পন্য বা পরিষেবা প্রচারের জন্য বিলবোর্ড ব্যবহার করে। এটি মার্কেটিং সংক্রান্ত একটি পদক্ষেপ যা প্রতিষ্ঠানকে কাস্টমারদের সাথে সংযোগ করতে সাহায্য করে এবং তাদের পন্য বা পরিষেবা সম্পর্কে জানানোর জন্য বিলবোর্ড ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন করে।
ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে কিভাবে আয় করবেন?
বর্তমানে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং করে ঘরে বসেই আয় করতে চাই। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে Digital Marketing থেকে আয় করা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করার জন্য আপনাকে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে প্রতিটি ধাপ আলোচনা করা হলোঃ
ধাপ-১ঃ Digital Marketing থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা থাকতে হবে। আর এই ধারনা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে যেকোনো একটি কোর্স করতে হবে। কোর্স করার মাধ্যমে আপনি Digital Marketing সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পাবেন।
ধাপ-২ঃ ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো স্তর রয়েছে যেগুলো আমি উপরে আলোচনা করেছি। সেগুলো থেকে আপনার পছন্দমতো যেকোনো একটি বেছে নিন। এরপর আপনি নিজে একটি ওয়েবসাইট খুলে অথবা কোনো স্বনামধন্য ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট খুলে নিজের প্রোফাইলটিকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে নিন এবং কাজ শুরু করুন।
ধাপ-৩ঃ বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটার অনেক বেশি হওয়ায় মার্কেটে নিজের স্থানকে শক্ত করতে হলে আপনাকে দক্ষ হতে হবে। আপনি যদি নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে না পারেন তবে আপনি Digital Marketing এ সফলতা অর্জন করতে পারবেন না। আপনি যদি দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার হন তবে আপনি কাজ অবশ্যই পাবেন এবং ভালো পরিমান অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ধাপ-৪ঃ আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং টুল গুলো সম্পর্কে জানতে হবে। কোন মার্কেটিং এর জন্য কোন টুল গুলো ব্যবহার করতে হবে তা বিস্তারিত জানতে হবে। বিভিন্ন মার্কেটিং টুল গুলো বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন: ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপে মার্কেটিং করার জন্য প্রয়োজন Meta Business Suit আবার ওয়েবসাইট ইউজারদের জন্য প্রয়োজন Google Analytics, Google Search console ইত্যাদি।
ধাপ-৫ঃ Digital Marketing থেকে আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো কনটেন্ট কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা থাকা। আপনার কনটেন্ট এর কোয়ালিটি যেনো ভালো হয় সেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনি যদি ভিডিও মার্কেটিং করেন তবে আপনার ভিডিও কোয়ালিটি এবং সাউন্ড কোয়ালিটি অবশ্যই ভালো হতে হবে। আবার আপনি যদি আর্টিকেল রাইটার হয়ে থাকেন তবে আপনাকে বানানের দিকে নজর দিতে হবে এবং শুদ্ধভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। আপনার কনটেন্ট কোয়ালিটি যদি ভালো না হয় তবে আপনি সফল হতে পারবেন না।
ধাপ-৬ঃ ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে আপনি কয়েকভাবে ইনকাম করতে পারেন। যেমন: নিজে ওয়েবসাইট খুলে, Digital Marketing করে এমন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে, নিজের ব্যবসায়ের মার্কেটিং করে। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করে এমন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চান তবে আপনি প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট পাবেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠান টি যদি আপনার নিজের হয় তবে প্রতি মাসে আপনি একি পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন না। কোনো মাসে কম বা বেশি হতে পারে। সেটা আপনার দক্ষতার উপর নির্ভর করবে।
ধাপ-৭ঃ Digital Marketing থেকে আয়ের শেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। এই সেক্টর থেকে আয় করতে হলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণ সময় ও শ্রম দিতে হবে। তবেই আপনি সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করবেন কিভাবে?
ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে Digital Marketing কোর্স করতে হবে। আপনারা অনেকেই চিন্তায় থাকেন কিভাবে কোর্স করবেন? কোথায় থেকে কোর্স করবেন? এখন আমি আলোচনা করবো কিভাবে আপনারা ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করবেন।
Digital Marketing কোর্স আপনি ২ ভাবে করতে পারেন। এগুলো হলোঃ
- কোনো আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করা
- অনলাইনে কোর্স করা
কোনো আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করা
আপনি কোনো স্বনামধন্য আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করতে পারেন। আপনি আপনার পছন্দমতো Digital Marketing বিষয়ক একটি কোর্সে ভর্তি হয়ে নিয়মিত ক্লাস করে ৫-৬ মাসের মধ্যে কোর্সটি সম্পন্ন করতে পারেন।
আপনি আপনার সময় ও শ্রম দ্বারা আপনার দক্ষতাকে বৃদ্ধি করতে পারেন। আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং করে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করতে চান তবে দেরি না করে আপনার নিকটস্থ যেকোনো ভালো একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে Digital Marketing কোর্সে ভর্তি হয়ে যান।
অনলাইনে কোর্স করা
আপনি চাইলে অনলাইন থেকেও ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সটি করতে পারেন। অনলাইন থেকে Digital Marketing কোর্স ২ ভাবে করা যায়। এগুলো হলোঃ
- পেইড কোর্স
- ফ্রি কোর্স
বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠানে অনলাইন থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোর্স করা যায়। কোথাও না গিয়ে ঘরে বসেই আপনি কোর্সটি করতে পারবেন। অনলাইনে কোর্সে ভর্তি হয়ে ৫-৬ মাস প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এতে করে বাহিরে গিয়ে ক্লাস করার ঝামেলা আর থাকবে না।
ফ্রি কোর্স
আপনি ইউটিউবে ফ্রি কোর্স করতে পারেন। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে ফ্রিতে Digital Marketing কোর্স দিয়ে থাকে। সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দমতো একটি চ্যানেল বেছে নিয়ে কোর্সটি করতে পারেন। যদিও ফ্রি কোর্সে আপনি হয়ত পুরোপুরি সবকিছু জানতে পারবেন না তবে বেসিক অনেক কিছুই জানতে পারবেন।
শেষকথা
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আলোচনা করলাম ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব, Digital Marketing এর প্রকারভেদ, ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে কিভাবে আয় করা যায়, ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স কিভাবে করবেন। এই পোস্টে আমি Digital Marketing বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আজকের আর্টিকেল টি পড়ার পর আপনাদের Digital Marketing বিষয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। এই বিষয়ে আপনাদের আরও কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
লিডিং আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url